বালুরঘাট নাবালিকা গণধর্ষণ কাণ্ড, ৫ বছর পর অভিযুক্ত ৫ জনকে ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি মাসে বালুরঘাট খিদিরপুর তালতলা সুকান্ত কলোনি এলাকায় ১৫ বছরের এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত ৫ জনকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানার সাজা ঘোষণা করল বালুরঘাট জেলা আদালত। এদিন বালুরঘাট জেলা আদালতের সেশন ও ডিস্ট্রিক্ট বিচারক সুপর্ণা রায় গণ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ৫ জনের সাজা ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্তদের ৫ জনের নাম রিন্টু দাস, সনজিৎ মহন্ত, শঙ্কর সরকার, প্রসেনজিৎ কুণ্ডু এবং আলো সরকার। অভিযুক্তদের মধ্য মূল অভিযুক্ত আলো সরকার৷ এই মহিলা নির্যাতিতার প্রতিবেশীর।

জানা গেছে, গত ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি আলো সরকার তাঁর খিদিরপুর শশ্মান এলাকার ভাড়া বাড়িতে নিয়ে গিয়ে গণ ধর্ষণ করতে সাহায্য করে। পর দিন অর্থাৎ ৮ তারিখ ওই নাবালিকাকে আলোর ভাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। এরপর ৯ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখ অভিযোগ দায়ের হয়৷ এদিকে অভিযোগ দায়ের পরই অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়। তারা তার পর থেকেই জেল হেফাজতে রয়েছে। গতকাল অভিযুক্ত পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে। এবং মঙ্গলবার অভিযুক্তদের বালুরঘাট আদালতের বিচারক সাজা ঘোষণা করে।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ওই মহিলার নাম আলো সরকার এবং বাকিদের নাম রিন্টু দাস, সনজিৎ মহন্ত, শঙ্কর সরকার ও প্রসেনজিৎ কুণ্ডু। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি বালুরঘাটের তালতলা সুকান্ত কলোনী এলাকায়। ১৫ বছরের এক কিশোরী বাড়িতে ঠাকুমার কাছে একাই থাকতেন। আর ঠাকুমা বাড়িতে ছিলেন না। ৭ জানুয়ারি ২০১৬, বাড়িতে ফিরে ওই কিশোরীকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে অবশেষে খিদিরপুরে একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়।

আরও জানা গিয়েছে, ওই এলাকারই আসামী আলো সরকার কিশোরীকে নিয়ে একটি বাড়িতে যায়। সেখানেই ওই চারজন পুরুষ কিশোরীকে গণধর্ষণ করে। স্থানীয় এলাকারই ওই চারজন পুরুষকে আসামী আলো সরকার ধর্ষণের ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে বলে অভিযোগ উঠে। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল এলাকায়। ঘটনার দুই দিন পরে অর্থাৎ ৯ জানুয়ারি কিশোরীর পরিবারের তরফে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরপর কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে।

এবিষয়ে সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী জানান, “২০১৬ সালের বালুরঘাটের খিদিরপুর তালতলা এলাকায় গণধর্ষণের ঘটনায় ৫ জনের বিরুদ্ধে পকসো, গণ ধর্ষণ সহ মোট ৯টি ধারায় মামলা শুরু করে বালুরঘাট থানার পুলিশ। ওই মামলায় এক মহিলা সহ ৫ জনের একটি ধারায় ২০ বছরের এবং অপর ধারায় ১৪ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারক। দুটি সাজা একসাথে চলবে, পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক বলে জানান সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী। পাশাপাশি নির্যাতিতাকে ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক।”

Spread the love