প্রয়াত সিপিএম নেতা হীরেন সাহা, বালুরঘাটে জেলা পার্টি অফিসে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫৮ বছর বয়সে চলে গেলেন সিপিএম-এর জেলা কমিটির সদস্য তথা সারা ভারত কৃষক সমিতির জেলা সম্পাদক হীরেন সাহা। বহু দিন ধরে লিভার ক‍্যান্সার রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি।

কলকাতা পিজি হাসপাতালে ভরতিও ছিলেন। এরপর কিছুদিন পর তার ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর গত ১৮ অগাষ্ট রাতে তার পতিরামের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি।

কিন্তু হীরেন সাহার শরীর আরও খারাপের দিকে যেতে শুরু করে। শাসকষ্ট ভীষণভাবে বেড়ে যায়। ফলে গত ১৯ শে অগাষ্ট সন্ধ্যায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভরতি করানো হয় ডাক্তার সার্থক সেন শর্মার অধীনে। কিন্তু বহু চেষ্টার পরেও আর শেষ রক্ষা হল না।

রাত ১টা ৫৮ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত‍্যাগ ক‍রেন তিনি। আজ ২০ অগাষ্ট পুরো লকডাউন মধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে শববাহী গাড়িতে করে ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির জেলা দফতর(যামিনী মজুমদার ভবনে) সকাল ৯ টার সময় আনা হয় তার মরদেহ।

জেলা পার্টি অফিসে রাখা হয় তার মরদেহতে পার্টির লাল পতাকা ও মালা দিয়ে সম্মানিত করেন ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির (মার্কসবাদী)র জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস। এছাড়া মাল‍্যদান করে তাকে সম্মানিত করেন পার্টির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মানবেশ চৌধুরী, অমিত সরকার, সর্ব্বানী নিয়োগী, কল‍্যাণ দাস,অচিন্ত্য চঙ্কবর্তী, নন্দলাল হাজরা,হরিরামপুর বিধায়ক রফিকুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা।

এছাড়া ১২ জুলাই কমিটির পক্ষে ছিলেন জয়ন্ত চন্দ, রাজ‍্য কো-অডিনেশনের পক্ষে মলয় সরকার, আরএসপি-র পক্ষে অমর সরকার, সুচেতা বিশ্বাস, অলোক ভট্টাচার্য্য, ফর‌ওয়ার্ডের পক্ষে ছিলেন সুব্রত দাস সহ সমস্ত গণ সংগঠনের নেতৃত্বরা।

এরপর জেলা পার্টি অফিস থেকে মিছিল করে সোজা জেলা কৃষক সমিতির কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে কিছুক্ষণ রাখার পর কমরেড হীরেন সাহার বাড়ি পতিরামের উদ্দেশ্যে র‌ওনা দেন। পতিরামের পার্টির অফিসে নিয়ে রাখা হয় সেখানে শয়ে শয়ে মানুষের চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন পতিরামের মানুষ সকলের প্রিয় হীরেন দা।

এরপর কমরেড হীরেন সাহার বাড়ি থেকে পতিরামের যামিনী মজুমদার কলেজ হয়ে শ্মশানঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, হীরেন সাহার জন্ম ১৯৬১ সালে। তিনি পড়াশোনা করতে করতে ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হন। পশ্চিম দিনাজপুর জেলার এসএফআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৮০ সালে পার্টির সদস্য হন। পরবর্তীতে জেলাভাগ হলে তখন ১৯৯৪ সালে এসএফআই জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

এরপর পার্টির জোনাল কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ধীরে ধীরে পার্টির হোলটাইমার হন এবং সারা ভারত কৃষক সমিতির জেলা সম্পাদক ছিলেন ও পার্টির জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।

পার্টির জেলা সম্পাদক নারায়ণ বিশ্বাস বলেন, “হীরেন সাহা অকালে চলে যাওয়াতে আমাদের পার্টির ক্ষতি হয়ে গেল।”

Spread the love