মানিকচকের গঙ্গায় ভয়াবহ লঞ্চ ডুবি, তলিয়ে গেল ৮টি লরি, নিখোঁজ বহু যাত্রী

বিস্তারিত প্রতিবেদন…
সংবাদ সারাদিন, মানিকচক: মালদার মানিকচকের গঙ্গার ঘাটে ভয়াবহ লঞ্চ ডুবির ঘটনায় চাঞ্চল্য। ডুবে গিয়েছে লঞ্চে থাকা পণ্য বোঝাই ৮টি লরি। সোমবার রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মানিকচক থানার রাজমহল গঙ্গার ঘাটে। এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে ব্যাপক শোরগোল পড়ে। এই লঞ্চ ডুবির ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যেই এলাকার মানুষের ভিড় জমে যায় গঙ্গার ঘাটে। খবর পেয়ে তদন্তে যায় মানিকচক থানার পুলিশ।রাতেই জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র এবং পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।পাশাপাশি উদ্ধারের ক্ষেত্রে দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের অফিসার ও কর্মীদের নদীতে নামানো হয়।

এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে প্রায় ১০ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়।পরে আরও বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে মানিকচক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে এরা প্রত্যেকে সুস্থ। যদিও ২ থেকে ৩ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানা গিয়েছে। সঙ্গে ৮টি ট্রাক নদী গর্ভে বিলীন হয়ে রয়েছে। কিভাবে এই লঞ্চ ডুবির ঘটনাটা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

ঘাটে অন্ধকার থাকায় রাতে উদ্ধার কার্যে জেনারেটরের মাধ্যমে সার্চ লাইটের বসানোর ব্যবস্থা করা হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। রাতেই নদীতে নামানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর কর্মীদের। স্পিড বোর্ড এর মাধ্যমে চলে গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশি অভিযান।

পুলিশ ও প্রশাসন জানিয়েছে , ঝাড়খণ্ডের রাজমহল থেকে মালদার মানিকচকের আসছিল বিশাল মাপের এই টলার লঞ্চটি। এই লঞ্চে দশটি পণ্যবাহী লরি ছিল। প্রতিটি লরিতে বালি, পাথর মজুত করা ছিল। মানিকচকের গঙ্গার ঘাটে লঞ্চটি লাগার মুহূর্তেই বেসামাল হয়ে পড়ে। এক পাশের ভার বেশি থাকায় লঞ্চের একপ্রান্ত ডুপতেই লরিগুলি একের পর এক গঙ্গার গভীরে তলিয়ে যেতে শুরু করে। এরপরই লঞ্চটি ডুবে যেতে শুরু করে। সেই সময় যাত্রীদের আর্তচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে সকলকে উদ্ধার করে।

এদিকে প্রশ্ন উঠেছে যে অতিরিক্ত পণ্য-সামগ্রীর বোঝাই লরি নিয়েই চলাচল করার ক্ষেত্রে কি এই বিপত্তি ঘটেছে। সে ব্যাপারে অবশ্য পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয় নি।

জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, আটটি পণ্যবাহী লরি গঙ্গার গভীরে তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছে। তবে সংখ্যা কত, এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। সমগ্র বিষয়ের উপর তথ্য চাওয়া হয়েছে পরবর্তীতে সমস্ত তথ্য জানানো হবে।

এদিকে ঘটনার কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড় চন্দ্র মণ্ডল। তিনি জানান এই দুর্ঘটনার সমগ্র দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে তার কাজ জোরকদমে চালানো হচ্ছে।

গভীর রাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বামফ্রন্টের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি জানান, বেশিরভাগ মানুষ এই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে সর্বপ্রথম সকলকে উদ্ধার করা হোক। পরবর্তীতে এই ঘটনা কি কারণে হল তা নিয়ে বলা উচিত। পরে প্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল। ওভারলোডিং নাকি অন্য কিছু কারণ তা সমস্তটাই পরবর্তীতে প্রশাসন দেখবেন এটাই আশা করছি।

এদিকে ঘটনাস্থলে রাতে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে শুরু করে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা পৌঁছে সমগ্র দিক খতিয়ে দেখেন। তোর জেলা প্রশাসন জানিয়েছে সকাল থেকে শুরু হবে আবার জোর তল্লাশি অভিযান।

Spread the love