বাংলা বনধ উপেক্ষা করে ঝাড়গ্রামে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জনসভায় মানুষের ভিড়

সংবাদ সারাদিন, ঝাড়গ্রাম : দিলীপ ঘোষ ও শুভেন্দু অধিকারীর সভার পাল্টা সভার ডাক দিয়ে ছিল তৃণমূল । সেই মত প্রস্তুতিও হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের । কিন্তু সভার ঠিক আগের দিনেই বাংলা বনধের ডাক দেয় বামফ্রন্ট । শুক্রবার সকাল থেকেই বনধ এর সমর্থনে দিকে দিকে পথ অবরোধ থেকে শুরু করে মিছিল করতে দেখা যায় সিপিএম কর্মীদের । তৃণমূল সভার পূর্বে থেকেই দাবি করে ছিল বিজেপির সভার থেকে তিন গুণ লোক হবে । তারই বাস্তবায়িত হল এদিন । বামদের বনধ কে উপেক্ষা করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন সভায় মানুষের ভিড় উপচে পড়ে ।

বেলা বারোটা থেকেই মানুষের জমায়েত শুরু হতে থাকে ঝাড়গ্রামের জামদা সার্কাস মাঠে । সভাস্থলে দুপুর তিনটা নাগাদ পৌঁছায় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় । এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন , আমরা তো এখানে বসে আছি আসলে সভা পরিচালনা করছেন আপনারাই । যারা অতি কষ্ট করে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুখ্যাম জবাব দেওয়ার জন্য  বিজেপি , কংগ্রেস , সি পি এম তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গলমহলের হাঁসি ফোটানো জঙ্গলমহলের উন্নয়নের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সপক্ষে জড় হয়েছেন । নাড্ডা বাবু প্লেনে করে এখানে একবার নামুন , আপনি গড্ডা খেয়েছেন মানুষের সমর্থন দেখুন এখানে কোথায় । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মানুষের সমর্থন কোথায় । আসল কথা বাইরে থেকে সৈন্যবাহিনী এনে , সেনাপতি এনে যুদ্ধে জয় করা যায় না ।

প্রধানমন্ত্রীকে উদেশ্য করে বলেন,  প্রধানমন্ত্রী বলছে সরকারি অনুষ্ঠান থেকে বিজেপির হয়ে এবার রাম কার্ড , আরে ভাই এবার জনতা কার্ড , মমতা কার্ড ।

তিনি আরও বলেন , এখানে দাবি ছিল কর্মসংস্থানের জন্য ,  তিরনবাজি দের জন্য ক্যাম্প করার দাবি ছিল , স্কুল , কলেজ , বিশ্ব বিদ্যালয় করার বাদি ছিল , শিক্ষক নিয়গের দাবি ছিল , কর্মসংস্থান তৈরি করার দাবি ছিল আপনা চেয়ে দেখুন তার দিকে । আজকে ঝাড়গ্রামের বুকে ঝাড়গ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয় তৈরি হয়েছে , মেডিকেল কলেজ , সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল , আলচিকি ভাষার স্কুল  হয়েছে । অন্যদিকে পাঁচশো আলচিকি শিক্ষক নিয়গের কাজ চলছে । কিছু দিনের মধ্যেই তার নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে । যে সমস্ত স্বকৃত ভাষা আছে সেই ভাষর বিদ্যালয় হবে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কথা বলেন যে প্রতিশ্রুতি দেন তা তিনি রাখেন । বিজেপির মত ফাঁকি বাজে নয় বা বামফ্রন্ট এর মত অত্যাচারি নয় । শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষে আমরা কাজ করছি ।

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদেওয়া নেতা উদ্যেশ্যে তিনি বলেন , অনেক দলবদলু নেতা এখানে এসে বলে যান তারা নাকি জঙ্গলমহলের ত্রাণ কর্তা , তারা ত্রাণ কর্তা না তারা পকেট ভরার কর্তা । জঙ্গলমহলের মানুষেকে দুঃখে রেখে নিজেরা বড় হয়েছে । জঙ্গলমহলের মানুষের দুঃখে তারা আসেনি , কোন এনজিও কে দিয়ে দুই একটি বাড়ি করছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস ক্রমাগত মানুষের পাশে থেকে মানুষের প্রত্যাশাকে পূরণ করেছে ।

বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন , আমি আশ্বত করতে চাই আপনাদের এরা শান্তিকে বিঘ্নিত করতে চাই , এরা উন্নয়নের পথ বন্ধ করে দিতে চাই , এরা বাড়ি তৈরি থেকে পঞ্চায়েত , এরা দুয়ারে সরকারের কাজ বন্ধ করে দিতে চাই । আজকে রেল বেসরকারি করা হচ্ছে , বিএসএনএল কে বেসরকারি করা হচ্ছে , এয়ারপোর্ট গুলোকে বেসরকারি করা হচ্ছে , জীবন বীমা গুলোকে বেসরকারির হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে । এটা হচ্ছে বেচাদের সরকার শুধু বেচে দাও । এই বেচে দেওয়া সরকার আর নয় দরকার ।

বিধানসভা ভোট কে লক্ষ্য করে তিনি বলেন , ২০২১ শের বিধানসভা নির্বাচনে আমাদের চারটি বিধানসভা প্রার্থীদের সবাই মিলে সমর্থন করুন আসলে প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন , তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাত , দেবু টুডু তৃণমূলের এসটি সেলের সভাপতি , ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন টুডু , ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মু , গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামনি মাহাত , বিনপুরের বিধায়ক খগেন্দ্রানাথ হেমব্রম , ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস , ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের দুই কো অর্ডিনেটার অজিত মাহাত ও উজ্জ্বল দত্ত সহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব ।

Spread the love