প্রার্থীকে ঘিরে বিক্ষোভের দানা বাঁধল হরিশ্চন্দ্রপুরে, ক্ষোভে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি বিজেপির বিক্ষুব্ধরা

সংবাদ সারাদিন, মালদা: বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে ফের বিক্ষোভের দানা বাঁধল মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। আর ওই ক্ষোভের জেরে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতিও শুরু করল বিজেপির বিক্ষুব্ধ শিবিরের একাংশ। পুরনো একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ফের নতুন করে বিক্ষোভের সূত্রপাত বলে জানা গিয়েছে। ওই খুনের ঘটনায় বিজেপি প্রার্থী মতিবুর রহমানের এক দাদা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরেই বাড়ির সামনে থেকে মতিবুরের ছবি দেওয়া প্রচারের ফ্লেক্স খুলে রাস্তায় ফেলে দেন নিহতের ভাই সাওরমল আগরওয়াল। সাওরমল এলাকার সক্রিয় বিজেপি কর্মী। মতিবুর প্রার্থী হওয়ার পর বাড়িতে গিয়ে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন সাওরমল। কিন্তু দাদার খুনের ঘটনায় অভিযুক্তের দাদা বিজেপি প্রার্থী, বিষয়টি জানার পর তাকে মানতে পারছেন না সাওরমল। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ফের ক্ষোভ ছড়ায়। সেই বিক্ষোভে বিজেপি নেতা জিয়াউর রহমান, মনোরঞ্জন দাসরাও হাজির ছিলেন। যদিও বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থী। পাশাপাশি এসব তৃণমূলের চক্রান্ত বলেও বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বিজেপির প্রার্থী ঘোষণার পরেই তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় হরিশ্চন্দ্রপুরে। পার্টি অফিসে ভাঙচুর, টায়ার পুড়িয়ে বিজেপি নেতাদের একাংশের অবরোধ-বিক্ষোভে উত্তেজনা ছড়ায়। সাময়িকভাবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পুরনো ওই খুনের ঘটনার বিষয়টি সামনে আসতেই নতুন করে অসন্তোষ দানা বাঁধে। জানা গেছে, ২০১২ সালের ২ ডিসেম্বর খুন হয়েছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের ব্যবসায়ী কানাইয়ালাল আগরওয়াল। ওই ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে ও তার জেলও হয়। ওই অভিযুক্ত বর্তমান বিজেপি প্রার্থীর দাদা বলে দাবি করেছেন নিহতের ভাই সাওরমল। ফলে বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী হলেও এমন একজনকে তিনি কিছুতেই প্রার্থী হিসেবে মানতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রথমে প্রার্থীকে ঘিরে দলের বিক্ষোভ। তারপর দু’দিন আগে প্রচারে গিয়ে বধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এবার পুরনো খুনের ঘটনায় একাংশের বিক্ষোভের বিষয়টি সামনে আসতেই বিব্রত বিজেপি নেতৃত্ব।

সাওরমল বলেন, “আমি বিজেপিকে ভালোবাসি। কিন্তু আমার দাদাকে খুনে প্রার্থীর ভাই জড়িত ছিল জানার পর কিছুতেই তাকে সমর্থন করতে পারি না। আমরা নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বিজেপির কাছে ভোট চাইব।”

জেলা সংখ্যালঘু মোর্চার নেতা জিয়াউল হক বলেন, “আমরা মতিবুরকে মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু যখন জানতে পারি যে প্রার্থীর দাদা খুনে জড়িত ছিল তারপর আর তাকে সমর্থন করা যায় না। তাই আমরা অন্য সিদ্ধান্ত নিতে চলেছি।” বিজেপি প্রার্থী মতিবুর রহমান বলেন, “আমার কোনও দাদা নেই। তৃণমূল দালালি করে এসব করছে।”

প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট অনিরুদ্ধ সাহা বলেন, “যারা বিজেপির পতাকা খুলে ফেলে তাদের কীভাবে দলের কর্মী বলব। ওরা অন্য দলের হয়ে কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে।”

এই প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, “বিজেপি প্রার্থীকে নিয়ে দলের অন্দরেই ক্ষোভের জেরে ভাঙচুর, আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। নিজেদের ত্রুটি আড়াল করতে তৃণমূলকে দালাল বলছে। আমাদের খেয়েদেয়ে কাজ নেই যে দালালি করতে যাবে।”

Spread the love