করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকার করতে পারছে না প্রশাসন, বালুরঘাট হাসপাতালে জমছে মৃতের পাহাড়

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: করোনা আক্রান্ত মৃতদেহ সৎকার করতে পারছে না প্রশাসন, বালুরঘাট সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল জমছে করোনায় মৃতের পাহাড়। পুর বিষয়ক দফতরের নির্দেশ স্বত্বেও কোভিড মৃতদেহের সৎকার করতে শ্মশান পাচ্ছে না বালুরঘাট পুরসভা। বাসিন্দাদের আপত্তিতে খিদিরপুর শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের উদ্যোগ নিয়েও ফিরে আসতে হয়েছে পুরসভাকে। ফলে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গেই জমছে কোভিড মৃতদেহ। ওই মর্গে মৃতদেহ জমতে জমতে এমনি দশা হয়েছে যে মর্গ উপচে পড়ছে। ফলে মৃতদেহ সংরক্ষণের ঠান্ডা মেশিন বারাবার কাজ শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

জানা গেছে, ওই মর্গে ২৪ টি চিলার মেশিন থাকলেও ১২টি আগেই খারাপ হয়ে ছিল। বাকি ভালো থাকা ১২টি চিলার মেশিনে ১২টি মৃতদেহ সৎকারের অভাবে জমে রয়েছে। তাই খারাপ থাকা মেশিনগুলি এদিন থেকে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুকুমার দে।
দ্বিতীয় দফায় করোনার কবলে পরে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে রাজ্যে। জেলাতেও মৃত্যু হচ্ছে করোনা রোগীদের। জেলায় এই পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৮ জনের। এর মধ্যে গত ৪৮ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। গত বছর মৃতদেহ সৎকারের সমস্যা হওয়ায়, এবারে রাজ্য পুর বিষয়ক দফতরের তরফ থেকে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা জারি করে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে সতকারের দায়িত্ব নেবার কথা বলা হয়েছিল। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী যে পুরসভা এলাকার বাসিন্দার করোনাতে মৃত্যু হবে, ওই মৃতদেহের সৎকারের দায়িত্ব নেবে সংশ্লিষ্ট পুরসভায়। সেই মোতাবেক বালুরঘাট পৌরসভার খিদিরপুর শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে মৃতদেহ সৎকারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কোভিড নিয়ম মেনেই সৎকার করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু এই উদ্যোগে এলাকার বাসিন্দারা প্রবল আপত্তি তোলে। থমকে যায় সৎকার প্রক্রিয়া।

এমনকি জেলা প্রশাসনের কর্তারা, পুর কর্তারা , এমনকি জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা এলাকায় গিয়ে বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে মানুষকে বুঝিয়েও সমস্যার সমাধান করতে পারেননি। ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে মৃতদেহে করোনা থাকে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর প্রচার চালালেও , মানুষকে বোঝানো যায়নি। যে পরিমাণ মৃতদেহ জমে রয়েছে মর্গে, তার অর্ধেকই বালুরঘাট পুর এলাকার বাসিন্দা। ফলে শ্মশানের অভাবে হাসপাতাল মর্গেই জমতে শুরু করেছে মৃতদেহগুলি। সেই মৃতদেহ গুলি কোথায় ও কবে সৎকার করা যাবে তা নিযে চিন্তায় রয়েছে জেলা প্রশাসন।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুকুমার দে বলেন, “মর্গে মৃতদেহ জমে রয়েছে। বালুরঘাট পুর এলাকার শ্মশানে মৃতদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই অন্যত্র শ্মশান খোঁজা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই মৃতদেহগুলি সৎকারের ব্যবস্থা করা হবে। এদিকে মর্গের মৃতদেহ সংরক্ষণের পরিকাঠামোও সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।”

Spread the love