বৃষ্টিতে জলমগ্ন বালুরঘাট রেললাইনের আন্ডারপাস, সমস্যা সমাধান পেতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফের জলমগ্ন বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষীরপুর ও সৈদপুর এলাকায় রেললাইনের আন্ডারপাস৷ আন্ডার পাসের ভেতরে প্রায় কোমর জল দাঁড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে কয়েকটি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অসুস্থ প্রসূতি রোগীকেও চিকিৎসা করাতে নিয়ে এসেও ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে খাসপুর গ্রামীণ হাসপাতাল বা বালুরঘাট হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, রেললাইন পেরিয়ে ওপারে কৃষকরা সব্জি ও অন্যান্য সরঞ্জাম শহরে নিয়ে যেতে পারছেনা এবং শহর থেকেও গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস গ্রামে নিয়ে যেতে পারছে না। বর্ষাকালে আন্ডারপাস বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে প্রায় ১৫-২০ কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ব্যবহার করছেন। যা নিয়ে গ্রামবাসীরা রেলের কাজে কর্মরত কর্মীদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বালুরঘাট-একলাখী রেল পরিষেবা চালুর পর থেকে বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে রেললাইন তৈরি হয়েছে। সেখানকার ক্ষীরপুর এবং সৈয়দপুর এলাকায় রেললাইনের উপর দিয়েই পারাপার করে গ্রামবাসীরা শহরের পথে যাতায়াত করত। তবে রেল দফতরের উদ্যোগে বছর দুয়েক আগে ওই এলাকায় দুটি আন্ডারপাস তৈরির হয়। বর্তমানে সেই আন্ডারপাস দিয়ে মানুষজন সহ যানবাহন চলাচল করে। অভিযোগ, এই আন্ডারপাস তৈরির পর থেকেই এনিয়ে সরব হন স্থানীয়রা। তাদের দাবি বৃষ্টি হলে জল জমে যেতে পারে আন্ডারপাসের। তাদের সেই কথা অবশেষে শেষ হল। আন্ডারপাস তৈরির পর থেকেই অল্প বৃষ্টি হলে জল জমে যায় আন্ডারপাসের ভেতরের এমত অবস্থায় আন্ডারপাসে কেউ যাতায়াত করতে পারে না। বিপজ্জনকভাবে রেললাইনের উপর দিয়ে যাতায়াত করে গ্রামের মানুষরা। আন্ডারপাসের জলের সমস্যা সমাধান পেতেই বৃহস্পতিবার দুপুরে বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষীরপুকুর এলাকায় আন্ডারপাসের সামনে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামের শতাধিক মানুষ। তাদের দাবি অবিলম্বে তাদের এই সমস্যার সুরাহা করতে হবে। তা না হলে তারা আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন।

রেল দফতরের কাছে সেখানে জল নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন তৈরির দাবি জানিয়েছিল গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, তবুও জল নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থায় করেনি। এনিয়ে গতবারও গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ করেছিলেন। এরপর এবছর বর্ষাকাল আসতেই দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। ওই আন্ডারপাস দিয়ে বোয়ালদার গ্রামপঞ্চায়েতের ওসাইল, ভাটরা, ব্রহ্মপুর, কাশিপুর এবং রাজুয়া সহ বিভিন্ন গ্রামের বহু মানুষ যাতায়াত করে। এছড়াও প্রতিদিন বহু সব্জি সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে শহর থেকে গ্রামে ও গ্রাম থেকে শহরে মানুষ পৌঁছায়৷

এবিষয়ে বিক্ষোভকারী ত্রিদিব ঘোষ, শ্যাম সুন্দর সরকার এবং সুজন ঘোষ বলেন, আন্ডারপাসে জল জমে থাকার ফলে গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে শহরের নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এই রাস্তার উপর দিয়েই মূলত এলাকার ৩০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে তাদের মূল কেন্দ্র খাসপুর৷ যেখানে গ্রামীণ হাসপাতাল আছে এবং সেখান থেকেই বালুরঘাট যেতে হয়। তাই এখানে জল জমে থাকলে তাদের যাওয়া সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। বর্ষাকালে এই রাস্তা দিয়ে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে৷ এনিয়ে তারা বহু অভিযোগ জানিয়েছেন। তবে লাভ কোন হয়নি। এরপর তাদের এই সমস্যা না মিটলে গ্রামবাসীরা রেল অবরোধ করতেও পিছুপা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন।

এবিষয়ে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে হাসপাতালে নিয়ে আসা তপনের মহঃ রফিকুল ইসলাম জানান, তার সদ্যজাত সন্তানকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এসে দেখেন ক্ষীরপুর আন্ডারপাসে জল জমে আছে৷ ছোট গাড়ি হওয়ার ফলে সেই দিক দিয়ে যেতে পারেননি। তাই তারা ঘুরে বালুরঘাটে যাবেন।

Spread the love