হিলি তুরা করিডর নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন বালুরঘাটের সাংসদ

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: হিলি তুরা করিডরের জন্য ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বারস্থ হলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার ফের একবার এই করিডরের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। এদিন দিল্লিতে নিজস্ব কার্যালয়ে এই চিঠি তুলে দেন সাংসদ। এর ফলে এই করিডর নিয়ে আশাবাদী সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।

বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মাত্র একশো কিলোমিটার একটা করিডর, একেবারে আমুল বদলে দিতে পারে পূর্ব ভারতের সাথে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাটা৷ একেবারে প্রায় ৭৭০ কিলোমিটার রাস্তা কমে যাবে। সেই কারণেই দীর্ঘদিন ধরেই হিলি- তুরা ভায়া বাংলাদেশ করিডোরের দাবি দীর্ঘদিনের। তবে এবারে এই করিডোর বাস্তবায়ন হতে পারে বলে আশাবাদী বালুরঘাটের সাংসদ ড: সুকান্ত মজুমদার। এদিন তিনি ওই করিডোরের দাবিতে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বারস্থ হলেন।

এদিন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত বাবু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে ওনার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি লিখিত দাবিও জানিয়ে এসেছেন। ওই দাবিপত্রে হিলি-তুরা ভায়া বাংলাদেশ, করিডোর স্থাপনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি বালুরঘাট থানার চিঙ্গিশপুর সীমান্তে আন্তজাতিক বর্ডার হাট এর অনুমতি দেবারও দাবি জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীও বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবেন এবং বাংলাদেশ সরকারের সাথে কথা বলবেন বলে এদিন সাংসদকে জানিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে হিলি থেকে মেঘালয় পর্যন্ত যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তুরা করিডর নিয়ে আন্দোলন করছেন বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুরবাসী। ২০১২ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে প্ল্যানিং কমিশনের তালিকার এক নম্বরে হিলি তুরা করিডোরের কথা উল্লেখিতও হয়েছিল। সেটিকে বাস্তবায়িত করতে “জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি ফর হিলি তুরা করিডর”এর মাধ্যমে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও মেঘালয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের মানুষজন আন্দোলন চালিয়ে আসছেন।

এই করিডর তৈরি হলে উত্তর ভারতের সঙ্গে খুব অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ সম্ভব হবে। এ রাজ্য থেকে মেঘালয় পৌঁছাতে যে পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় দুই দিন। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থেকে বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে মেঘালয়ের তুরা পর্যন্ত করিডর চালু হলে সেই পথের দূরত্ব কমে হবে মাত্র দুই থেকে তিন ঘন্টা।এই করিডর চালু হলে উত্তরবঙ্গের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালোভাবে গড়ে উঠবে তাই সকলের আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতেই সাংসদ হবার পর থেকেই সংসদে এ বিষয়ে সরব হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।

২০২০ সালের মার্চ মাসে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে এই দাবি তুলে ধরেন। পরে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও চিঠি দেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ওই করিডর বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণে এবারে ফের দাবি তুলতে শুরু করেছেন সাংসদ। গত শুক্রবার তিনি এ নিয়ে সংসদে সরব হন। এদিন সরাসরি তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে দাবি সনদ তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে সাংসদ বলেছেন, গত বছরের মার্চ মাসে তুরা করিডোর বাস্তবায়নের দাবি নিয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকে হিলি- তুরা করিডোরের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। এই নিয়ে ধন্যবাদও জ্ঞ্যাপন করেছি।
বালুরঘাটের সাংসদ ডক্টর সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, করিডর কমিটির পাশাপাশি তিনি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে এ ব্যাপারে দিল্লিতে কথা বলেছিলেন।

করিডরটি চালু হলে শুধু জেলা তথা পশ্চিমবঙ্গে নয় সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশেরও অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহ সমগ্র ক্ষেত্রের উন্নতি ঘটবে। তাই এই করিডোর বাস্তবায়ন করতেই প্রধানমন্ত্রীর দারস্ত হয়েছেন তিনি।প্রধানমন্ত্রীও আশ্বস্ত করেছেন।

Spread the love