ভদ্রেশ্বরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতার টোটো চোর দম্পতি, উদ্ধার ৪টি টোটো

সংবাদ সারাদিন, ভদ্রেশ্বর: সিসিটিভি ফুটেজ দেখে টোটো চোর দম্পতিকে গ্রেফতার। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে চুরির টোটো উদ্ধার করল ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ।
বেশ কিছুদিন থেকে টোটো চুরির অভিযোগ আসছিল ভদ্রেশ্বর থানা এলাকায়। টোটো চোর ধরতে একটা স্পেশাল টিম তৈরি করে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট। গত ২৯ আগস্ট গৌরহাটির মহঃ রিয়াজুদ্দিনের টোটো চুরি হয় ভদ্রেশ্বর লাইব্রেরী রোড থেকে।এ্যাঙ্গাস ফাঁড়ির পিসি পার্টির কাছে খবর আসে টোটো চুরি করেছে দুইজন যুবক যুবতী। এর পরেই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ভদ্রেশ্বর চাঁপদানীর সব গ্যারাজে খোঁজ শুরু করে। একটি গ্যারাজ থেকে দম্পতির ফোন নম্বর পেয়ে যায় পুলিশ। তার পরেই ফোনের সূত্র ধরে পুলিশের নাগালে আসে দম্পতি। তাদের গ্রেফতার করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতেই বেড়িয়ে আসে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা।

ভদ্রেশ্বরের রামকৃষ্ণ পল্লীর বাসিন্দা রাহুল বিশ্বাস ও তার স্ত্রী পিয়া বিশ্বাস কয়েকমাস আগে বৈদ্যবাটি কাজিপাড়া থেকে এসে ভদ্রেশ্বর রামকৃষ্ণ পল্লীতে ভাড়াতে থাকতে শুরু করে। তারাই এইভাবে টোটো চুরি করে বিক্রি করে দিত। কয়েকদিন ধরে এলাকায় লাগাতার টোটো চুরির অভিযোগ আসছিল থানায়। খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে চন্দননগর কমিশনারেটের পুলিশ। ভদ্রেশ্বর থানার আই সি কৌশিক ব্যানার্জি থানার কয়েকজন নির্ভরশীল অফিসার নিয়ে একটি টিম তৈরি করেন যার নেতৃত্ব দেন এ্যাঙ্গাস পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই রঞ্জন দাস।

পুলিশ সূত্রে খবর দম্পতি জানিয়েছে, গত বছর লকডাউনের সময় থেকে এই কাজ শুরু করে। এক সময় রাহুল নিজেও টোটো চালাত।মোট পাঁচটা টোটো তারা দু’জনে মিলে চুরি করেছে বলে স্বীকার করে। পুলিশ এখনো অবধি চারটি টোটো উদ্ধার করেছে। টোটো চালক মহঃ রিয়াজুদ্দিন জানায় সে গৌরহাটি ইএসআই কোয়ার্টারের কাছে থাকে। ভদ্রেশ্বর যাবে বলে তার টোটো ভাড়া করে ওই দম্পতি।চুরির জন্য তারা সময় বাছে নির্জন দুপুর বা সন্ধ্যা। স্বামী স্ত্রী দু’জনে আলাদা আলাদা ভাবে একই টোটোতে উঠত। পিয়ার সঙ্গে থাকত ভারী ব্যাগ। দুপুর বেলা ফাঁকা সময়ে কোনও নির্জন গলির কাছে গিয়ে পিয়া নেমে টোটো চালককে বলতো ব্যাগটি খুব ভারী একটু যদি নামিয়ে এগিয়ে দেয়। টোটো চালক সেই ব্যাগ নিয়ে কিছুদূর যেতে না যেতেই রাহুল টোটো নিয়ে পালিয়ে যেত। টোটো চালক আর তার টোটো খুঁজে পেত না। অন্যদিকে পিয়াও সরে পড়ত। এইভাবেই কয়েকদিন চলছিল।

এরপর তাদের কৌশল পাল্টায়। স্যানিটাইজারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে চালকের নাকে স্প্রে করে টোটো চুরি করে নেওয়ার অভিযোগও করেছেন টোটো চালক রিয়াজুদ্দিন। শেওড়াফুলিতে একটি দোকান ছিল রাহুলের।লকডাউনের জেরে সেই দোকান বন্ধ হয়ে যায়। এরপর রাহুল ভাড়ায় টোটো চালাতে শুরু করে। কিছুদিন টোটো চালাবার পর মালিকের টোটোই বিক্রি করে দিয়ে পালিয়ে আসে ভদ্রেশ্বরে। ভদ্রেশ্বরে এসেও টোটো চুরিকেই আয়ের রাস্তা করে নেয়। সঙ্গী হয় তার স্ত্রী পিয়া। তারা দু’জনে মিলে শুরু করে টোটো চুরি।

Spread the love