নিখোঁজ আদিবাসী শিশু কন্যার মৃতদেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য ঝাড়গ্রামে

সংবাদ সারাদিন, ঝাড়গ্রাম: কালীপুজোর দিন প্রায় ছয় বছরের এক আদিবাসী শিশু কন্যা নিখোঁজের ঘটনায় ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম থানার বাবুরামপাথরা গ্রামে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কালী পূজার দিন দুপুর থেকে দুলালী মাণ্ডি নামে প্রায় ৬ বছরের ওই শিশু কন্যা নিখোঁজ বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বিষয়টি গ্রামেরই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। শুক্রবার ওই শিশু কন্যার বাবা সিংরাই মাণ্ডি নয়াগ্রাম থানায় গিয়ে তার মেয়ে নিখোঁজ বলে অভিযোগ দায়ের করেন। নয়াগ্রাম থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে তার প্রতিবেশী দুই যুবক ওই শিশু কন্যাকে সঙ্গে নিয়ে মাঠের দিকে গিয়েছিল। শুক্রবার রাতেই তার প্রতিবেশী সম্পর্কে কাকু সাগুন মুর্মু নামে ২৫ বছর বয়সের এক যুবক সহ আরও একজনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গিয়ে তাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশ জানতে পারে ওই শিশু কন্যাটিকে ধর্ষণ করে খুন করে ধান জমির মাঝে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে ওই অভিযুক্ত দুই যুবক।

রবিবার দুপুরে অভিযুক্ত দুই যুবককে সঙ্গে নিয়ে নয়াগ্রাম থানার পুলিশ বাবুরামপাথরা গ্রামের ধান জমির মাঝখান থেকে দুলালী মাণ্ডির নিথর দেহ উদ্ধার করে। কি কারণে ওই ঘটনা অভিযুক্ত যুবক ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্ত যুবককে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। একমাত্র মেয়ে খুন হয়ে যাওয়ার ঘটনায় শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সিংরাই মাণ্ডি।

তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে অন্যত্র থাকে। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে আমি বাড়িতে থাকতাম। আমি কাজে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলাম। কাজ থেকে ফিরে এসে দেখি আমার মেয়ে বাড়িতে নেই। আমি পুলিশকে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ছিলাম আমার মেয়েকে উদ্ধার করার জন্য। পুলিশ অবশেষে আমার মেয়েকে জীবিত নয় মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।ওই ঘটনার ফলে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা থাকায় ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। নয়াগ্রাম থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ঠিক কি কারণে ওই শিশু কন্যাটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ঝাড়গ্রাম জেলার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, দুই যুবক ওই শিশু কন্যাটিকে ধর্ষণ করে খুন করেছে বলে স্বীকার করেছে। এরপর তারা ওই শিশু কন্যাটিকে ধান জমির মাঝে মাটির গর্ত খুঁড়ে পুঁতে দিয়েছিল। দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Spread the love