সংবাদ সারাদিন, মাথাভাঙা: শনিবার রাতে বাঘের আতঙ্ক ছড়ালো মাথাভাঙ্গা ১ নং ব্লকের জোরপাকড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর এলাকায়। গতকাল রাতে ওই এলাকার একটি বাড়িতে এক মহিলা এক সঙ্গে একাধিক বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করেছেন, যার মধ্যে দুটি শাবক-ও ছিল। তবে সেটি বাঘ না চিতাবাঘ তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। যদিও বন দফতরের দাবি রয়্যালবেঙ্গল হওয়ার সম্ভবনা কম। চিতাবাঘ হতে পারে। আগেও এই এলাকায় চিতাবাঘ ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। সংশ্লিষ্ট এলাকায় বাঘ ঢুকেছে এই ভীতির সঞ্চার হয়। ঘটনার খবর পেয়ে মাথাভাঙ্গা বন দপ্তরের রেঞ্জার ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং সারারাত ধরে ওই এলাকায় পাহারা দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়। তবে আদৌ বাঘ নাকি অন্য কোন জন্তু সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার হয়নি।
যদিও শিবপুর এলাকার ওই যুবতী জানান, গতকাল রাতে সে বাড়ির পাশে পাঁচটি বাঘ দেখতে পান। এরপর তার ভাই চকলেট বোমা ছুড়লে বাঘ পালিয়ে যায়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রামজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই ওই এলাকায় চাষের জমিতে অজানা জন্তুর পায়ের ছাপে বাঘের আতঙ্ক ছড়ায়।সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করতে প্রশাসনের তরফে সচেতন করে আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলা হয়েছিল তেমনি গতকাল রাতেও বনদপ্তর এর পক্ষ একই বার্তা দেওয়া হয়।
মাথাভাঙ্গা বনদপ্তরের রেঞ্জার সঞ্জয় পাল বলেন, গ্রামে বাঘ ঢুকেছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা পাহারা দিচ্ছি, পাশাপাশি গ্রামবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছি। আদৌ বাঘ আছে কিনা তা এখনও জানা যাচ্ছে না। রবিবার সকালে এলাকায় বাঘ ধরার জন্য বসানো হলো খাঁচা। গ্রামবাসীকে সতর্কভাবে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বনদপ্তর। যেহেতু একটা দুটো বাঘ নয় একসঙ্গে পাঁচটি বাঘের দেখা মিলেছে বলে দাবি গ্রামবাসীর, সেই সাথে আবার বাচ্চাও রয়েছে, সেই কারণে বাড়তি সতর্কতা নিতে বাধ্য হচ্ছে বনদপ্তর। সন্ধ্যার পর গ্রামবাসীদের ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করেছেন তারা। শনিবার সারারাত এলাকার বিভিন্ন চাষী জমিতে লাঠি বাঁশ নিয়ে বাঘের খোঁজ করেন গ্রামবাসীরা। পায়ের ছাপ পাওয়া গেলেও বাঘের হদিস পাওয়া যায়নি।
বন দপ্তরের প্রাথমিক অনুমান পার্শ্ববর্তী চিলাপাতা জলদাপাড়া রেঞ্জ হয়ে মানসই নদীর মাধ্যমে বাঘ প্রবেশ করেছে। তবে প্রাথমিকভাবে ভারতীয় চিতা অনুমান করছে বনদপ্তর। এর আগেও মাথাভাঙা সংশ্লিষ্ট এলাকায় চিতাবাঘ এবং বাইসনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। সুতরাং সুরক্ষিত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছে বনদপ্তর।