রাখে হরি মারে কে, জঙ্গল থেকে সদ্যোজাতকে উদ্ধার করে বালুরঘাট থানার পুলিশের হাতে তুলে দিলেন আদিবাসী দম্পতি

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: কান্নার আওয়াজ শুনে রাতের অন্ধকারে জঙ্গল থেকে উদ্ধার সদ্যোজাত কন্যা সন্তান৷ রবিবার রাতে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদার গ্রাম পঞ্চায়েতের দোগাছি এলাকায়। গতকাল রাতে কন্যা সন্তানটিকে উদ্ধার করে এক আদিবাসী দম্পতি। এবং শিশুটিকে সযত্নে রাখে নিজেদের কাছে। গতকাল রাতে উদ্ধারের পর সদ্যোজাত শিশুটিকে সোমবার দুপুরে বালুরঘাট থানা ও চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কন্যা সন্তানের জন্যই হয়তো সদ্যোজাত শিশুটিকে রাতের অন্ধকারে ফেলে দিয়ে গেছে তার পরিবার। রাতে অন্ধকার তার উপর জঙ্গল এলাকায় শিয়াল থেকে কুকুর রয়েছে। বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। কথায় আছে ‘রাখে হরি মারে কে’। শিশুটির বাবা মা-র খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ ও চাইল্ড লাইন কর্তৃপক্ষ।

অডিও-ভিডিও

জানা গেছে, গতকাল রাত ন’টা নাগাদ দোগাছি ফরেস্ট থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। জঙ্গলের ভেতর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়ে প্রথমে ঘাবড়ে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপর সাহস দেখিয়ে স্থানীয় মিনতি সরেন তার স্বামী সহম মার্ডি ও মিনতি হাঁসদা এবং প্রতিবেশীরা জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যান। রাতের অন্ধকারে টর্চলাইট মারতেই আলো গিয়ে পড়ে কন্যাসন্তানের উপর। জঙ্গলের মধ্যে পড়ে রয়েছে কন্যা সন্তান। কেউ বা কারা ওই সন্তানটিকে রাতের অন্ধকারে ফেলে দিয়ে চলে যায়। কন্যা সন্তান দেখতে পেয়ে তাকে কাছে টেনে নেন মিনতি সরেন ও মিনতি হাঁসদা। এরপর বাড়িতে নিয়ে যান শিশুটিকে। সোমবার সকাল হতেই খবর দেন পুলিশকে। পরে পুলিশ এসে শিশুটিকে নিয়ে যায়। বর্তমানে শিশুটি চাইল্ড লাইনের হেফাজতে রয়েছে। চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে তোলার পর সিদ্ধান নেওয়া হবে শিশুটি কোথায় রাখা হবে।অনেকে সন্তান চেয়েও পান না আর এই ক্ষেত্রে কন্যা সন্তানের জন্য নিষ্পাপ শিশুকে ফেলে দিয়ে যাওয়ার ঘটনায় নিন্দা প্রকাশ করেছেন শহরবাসী।

এবিষয়ে উদ্ধারকারী মিনতি সরেন ও মিনতি হাঁসদা বলেন, গতকাল রাতে দোগাছি ফরেস্ট থেকে সদ্যোজাত শিশু কন্যাটি উদ্ধার হয়েছে৷ কন্যা সন্তানের জন্যই হয়তো তার বাবা মা ফেলে গেছে। রাতে শিশুটিকে তাদের কাছেই রেখেছিলেন। বর্তমানে শিশুটিকে পুলিশের মাধ্যে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দিয়েছেন।

এবিষয়ে চাইল্ড লাইনের সদস্য অনুশ্রী শীল বলেন, খবর পেয়ে থানায় এসেছেন। শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে তোলার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শিশুটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে কন্যা সন্তানের জন্য হয়তো ফেলে রেখে গেছে।

অন্যদিকে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে। চাইল্ড ওয়েল ফেয়ার কমিটিতে তোলার পর শিশুটিকে হোমে রাখা হবে। পাশাপাশি শিশুর বাবা মার খোঁজ করা হচ্ছে।

Spread the love