৫০০ বছর ধরে একই রীতি মেনে পুজো হয়ে আসছে রতুয়ার শিবপুর ঘাটের সার্বজনীন দুর্গাপূজা

সংবাদ সারাদিন, পরিতোষ সরকার, মালদা: আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপরই সূচনা দেবি পক্ষের। সেজে উঠছে শহরতলী থেকে গ্রাম গঞ্জের পুজো মণ্ডপগুলি। নদী ভাঙ্গন ও বন্যা কবলিত এলাকার অন্যতম পুজো মালদার রতুয়া থানার কাহালা শিবপুর ঘাট সার্বজনীন দুর্গাপূজা। প্রায় পাঁচশো বছর ধরে একই রীতিনীতি নিষ্ঠার সাথে পুজো হয়ে আসছে। তবে নদী ভাঙ্গনে বেশ কয়েকবার স্থানও বদলেছে। স্থায়ী মন্দিরে ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে পূজা হচ্ছে ফুলাহার নদীর তীরে। এলাকায় এই দুর্গাপূজা বুড়িমা পূজা নামে প্রচলিত রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকার জমিদার পরিবারের সদস্য সৌরেন্দ্র মোহন মিশ্রের বংশ পরম্পরায় পূজা শুরু করেছিলেন মায়ের সপ্নাদেশ পেয়ে। সময়ের সাথে বদলেছে পুজোর স্থান পারিবারিক পুজো বর্তমানে সার্বজনীন রূপ নিয়েছে। তবে রয়ে গেছে একই রীতিনীতি ভক্তি নিষ্ঠা। কাহালা অঞ্চলের শিবপুর ঘাটে ফুলাহার নদীর তীরে মায়ের স্থায়ী মন্দিরের পূজা অর্চনা হয়ে আসছে। এলাকাবাসীর মতে এই মায়ের মহিমায় নদীয়ার প্রকট রূপ ধারণ করে না। আশেপাশে এলাকায় কমবেশি ভাঙ্গন চললেও এই এলাকা ভাঙ্গন না হাওয়ায় মায়ের স্থায়ী মন্দির করে তোলা হয়েছে। পুজোর কটা দিন গ্রামবাসীরা মিলন উৎসবের মেজাজেই কাটে।

পূজা উদ্দোক্তাদের মতে, প্রায় ৫০০ বছর প্রাচীন এই পুজো। এলাকায় কয়েকশ বিঘার হরিবাগান নামে একটি বাগান ছিল। তবে ফুলাহার নদীর দাপটে সমস্তটাই নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। একের পর এক স্থান পরিবর্তন হতে থাকে মায়ের পুজো অর্চনার। শেষমেষ ফুলহর নদীর তীরে শিবপুর ঘাটে পূজা অর্চনা শুরু হয় প্রায় একশো বছর আগে। তবে মায়ের পুজো অর্চনা শুরু হলে এই এলাকায় আর ভাঙ্গনের তেমন রূপ দেখা যায়নি ফুলাহার নদীর। তবে এখনো মন্দির ঘেঁষে রয়েছে ফুলহার নদী। একই রীতিনীতি নিষ্ঠা মেনেই পূজা অর্চনা চলছে। বর্তমানে গ্রামবাসীরা একত্রিতভাবে পুজো পরিচালনা করে আসছে। এবছরও পূজোর প্রস্তুতি জোর কদমে চালাচ্ছে গ্রামবাসীরা। এক চালায় মায়ের সাবেকি মূর্তিতে পুজো অর্চনা রীতিমেনেই করে আসছে শিবপুর সর্বজনীন দুর্গাপূজা কমিটির কর্মকর্তারা। খুবই জাগ্রত রয়েছে এই দুর্গাপূজা বলে দাবি এলাকাবাসীর। রীতি মেনে পুজো চলাকালীন চলে পশু বলি প্রথাও।

পুজো কমিটির সদস্য রাজেশ সিংহ জানান, বৃষ্টির সমস্যা জেরে এলাকার বহু পরিবারের পাটের ঠিকঠাক ফলন ও পচন প্রক্রিয়া পড়তে না পারায় আর্থিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যার মুখে পড়তে হতো। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আর্থিক অনুদান দেওয়াই কি পুজো পরিচালনা করতে অনেকটাই সহযোগিতা হবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর এমন উদ্যোগকে জানাচ্ছেন তারা।

Spread the love