উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার কলকাতায়, অ্যাম্বুলেন্স না আসায় বালুরঘাট হাসপাতালে মৃত্যু যুবকের

সংবাদ সারাদিন, কুমারগঞ্জ: উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতায় রেফার করলেও শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স না আসার ফলে একরকম বিনা চিকিৎসায় বালুরঘাট হাসপাতালে মৃত্যু হল পথ দুর্ঘটনায় জখম হওয়া যুবকের৷ মৃতের নাম প্রসেনজিৎ বসাক(২০)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের সমজিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আঙিনা বড়ইট এলাকায়৷ পেশায় সোনার কারিগর। এদিকে এই ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতি ও বেহাল অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিয়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করল মৃতের পরিবারের সদস্যরা। এদিকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা আশ্বাস দিয়েছেন বালুরঘাট হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জ ব্লকের ভুতকুড়ি এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন প্রসেনজিৎ৷ বিষয়টি নজরে আসতেই তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে চিকিৎসার জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ সেখানেও অবস্থার অবনতি হলে কলকাতায় রেফার করেন চিকিৎসকরা। এদিকে কলকাতায় রেফার করা হলেও কোন অ্যাম্বুলেন্স আসেনি৷ একাধিকবার ফোন করা হলেও আসেনি অ্যাম্বুলেন্স। এমত অবস্থায় বালুরঘাট হাসপাতালেই রাত ২ টা ২০ মিনিটে মারা যায় ওই যুবক।এই জায়গা থেকেই মৃতের পরিবারের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার ক্ষেত্রে ঢিলেমি করা হয়েছে। যিনি দ্বায়িত্বে ছিলেন তিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। এমনকি কথা বলার মত অবস্থাতেও ছিলেন না তিনি। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থেকে মৃত্যু হয় প্রসেনজিতের। যা নিয়ে ক্ষোভ দেখায় পরিবারের সদস্যরা। শনিবার দুপুরে বালুরঘাটে হাসপাতাল সুপারের কাছে এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবারের সদস্যরা।

এবিষয়ে মৃতের আত্মীয় বিক্রম বসাক বলেন, পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিল প্রসেনজিৎ। তাকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রাত পনে নটা নাগাদ ভর্তি করা হয়েছিল। পরে চিকিৎসকরা রেফার করে কলকাতায়৷ কিন্তু শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্সের জন্য প্রসেনজিৎকে বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি৷ এনিয়ে তারা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এমনটা যাতে আগামী দিনে আর না ঘটে তার দাবিও জানিয়েছেন তিনি৷

এবিষয়ে মৃতের আরেক আত্মীয় রঞ্জিত বসাক বলেন, বালুরঘাট থেকে রেফার করা হয়েছিল বাইরে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সকে বার বার ফোন করেও আসেনি। যা টাকা চেয়েছিল সেটা দিতেও রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও সঠিক সময়ে আসেনি অ্যাম্বুলেন্স। যার ফলে একরকম বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রসেনজিতের। আজ তাদের ক্ষতি হয়েছে। আগামীদিনে তাদের সঙ্গে এমনটা হলে তারা জ্বালাটা বুঝতে পারবেন।

অন্যদিকে এবিষয়ে বালুরঘাট হাসপাতালে সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, বিষয়টি মৌখিক ভাবে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। তবে লিখিত অভিযোগ পাননি। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Spread the love