সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: রক্তের বিনিময়ে নেওয়া হচ্ছে রোগীর পরিজনদের কাছ থেকে টাকা। এমন গুরুতর অভিযোগ উঠল বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের কর্মীদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হতে রোগীর পরিবারের তরফ থেকে হাসপাতাল সুপারকে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে অভিযোগ পেতেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বালুরঘাট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, দুস্থ ওই পরিবারের এক মহিলার কাছ থেকে ৭০০ টাকার বিনিময়ে এক ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়েছে। এদিন ফের রক্তের প্রয়োজন হলে রক্ত না পাওয়ায় বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই মহিলা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাসপাতালে। খোদ হাসপাতালে এমন ঘটনায় বিস্মিত হাসপাতাল সুপার। অভিযোগ হাতে পেলে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখবেন বলে হাসপাতাল সুপার দিয়েছেন। অভিযোগ, দালালরা হাসপাতালের কর্মীদের সঙ্গে মিশেই এই কাজ করছে। যার ফলে এক ইউনিট রক্ত ৭০০ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হচ্ছে। যা প্রকাশ হতেই হৈচৈ পড়েছে হাসপাতাল চত্বরে। এদিন ওই পরিবার হাসপাতালে এসেও রক্ত পায়নি। এরপর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক সহ বিভিন্ন চত্বর ঘুরে বেড়ায়। যার ফলে হাসপাতালে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। এদিকে এই অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এবিষয়ে বালুরঘাট ব্লকের শোভরা শ্যামপুর গ্রামের অভিযোগকারী ওই মহিলা দেবকী রায় বলেন, আমার শ্বশুর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে৷ রক্তের খুবই প্রয়োজন ছিল। আমি ব্লাড ব্যাঙ্কে যাওয়ার পরে রক্তের জন্য কার্ড কিংবা ডোনারের কথা বলেন। কিন্তু আমাদের কাছে কিছুই ছিল না। এরপরে একজন টাকার বিনিময়ে রক্ত দেওয়ার কথা বলেন। বাধ্য হয়ে আমি ৭০০ টাকা দিয়ে এক ইউনিট রক্ত জোগাড় করেছিলাম। কিন্তু পরে আবার রক্তের প্রয়োজন পড়লে তা আর কিনতে পারিনি।
এবিষয়ে ওই পরিবারের আরেক আত্মীয় মলয় রায় বলেন, এই হাসপাতালের স্টাফ ও কিছু দালালরা মিলে এই কাজটা করেছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আজকে হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। যাতে আর কোন অসহায় গবীর পরিবার এদের পাল্লায় না পড়ে।
এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর ভলান্টারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশন এর সম্পাদক দুলাল বর্মন বলেন, রক্তের জন্য কখনও টাকা নেওয়া উচিত না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এর তদন্ত হওয়া উচিত।
এবিষয়ে বিজেপির যুব মোর্চার টাউন কমেটির সভাপতি বাবুসোনা অধিকারী বলেন, সরকারি হাসপাতালেও দালালদের সক্রিয়তা বেড়ে গিয়েছে। টাকা ছাড়া কোনকিছুই হয় না। এটা নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামব।
অন্যদিকে এবিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, এই বিষয়ে এখনও লিখিত অভিযোগ হাতে পাইনি। অভিযোগ মৌখিকভাবে শুনেছি। এই নিয়ে তদন্ত কমেটি গঠন করা হবে। অভিযোগ প্রমাণ হলে এর বিরুদ্ধে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।