বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্তের কালোবাজারি রুখতে ময়দানে নামলেন খোদ জেলা শাসক

সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের কালোবাজারি রুখতে ময়দানে নামলেন খোদ জেলা শাসক। সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক, পুলিশ ও দক্ষিণ দিনাজপুর ব্লাড ডোনার্স ফোরামের সদস্যদের নিয়ে বিশেষ বৈঠক করলেন জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা। রক্তের জন্য কোন ভাবে রোগী ও তাদের পরিবারকে হয়রানির মুখে পড়তে না হয়, তার নির্দেশ দেন জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা। পাশাপাশি তদন্ত কমিটি গঠন করে পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে রক্ত নিয়ে রোগীর পরিবার যাতে কোনো রকম সমস্যায় না পড়ে তার জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাংকের হেল্পলাইন নাম্বার চালু করতে চলেছে পুলিশ। সেই নাম্বারে ফোন করলে পরে পুলিশকর্মীরা গিয়ে রক্তদান করবেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রক্ত নিয়ে কালোবাজারির অভিযোগ ওঠে। গ্রামের দুঃস্থ এক মহিলার কাছে এক ইউনিট রক্ত ৭০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। এমনি অভিযোগ জমা পড়ে হাসপাতাল সুপারের কাছে। যা নিয়ে তোলপাড় হয় জেলা। এদিকে ওই ঘটনায় হাসপাতালের তরফে তদন্ত কমেটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রক্তের কালোবাজারির ঘটনায় কে কে যুক্ত রয়েছে। এছাড়াও রক্তের দালাল চক্রের রয়েছে কিনা তা নিয়ে তদন্ত চলছে। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের তরফে এবিষয়ে নজরদারি চলছে। রক্ত নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে দালাল রুখতে পুলিশ বাইরে নজরদারি চালাবে। এছাড়াও রক্তের কালোবাজারি রুখতে পুলিশই রক্তের প্রয়োজন মেটাবে বলে জানিয়েছে। অতিশীঘ্রই পুলিশের তরফে এই হেল্প লাইন নম্বর চালু করে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

বিগত করোনা কালেও পুলিশ রক্ত প্রয়োজন মেটাতে বিশেষ শিবির করে সাধারণ রোগীদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। পুলিশের তরফে একটি হেল্প লাইন নম্বর চালু করা হচ্ছে। সেই নম্বর হাসপাতালেই থাকবে। যদি রোগীর পরিবারের কাছে রক্তের কার্ড বা ডোনার না থাকে, তাহলে পুলিশের ওই হেল্প লাইনে ফোন করতে হবে৷ এরপর পুলিশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিংবা জেলার রক্তদান সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করে রক্তের ব্যবস্থা করে দেবেন৷ এছাড়াও প্রয়োজনে পুলিশ কর্মীরাই ওই রক্তের গ্রুপের ব্যবস্থা করে দেবেন। যার ফলে রোগীদের রক্ত নিয়ে আর হয়রানির শিকার হতে হবে না। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রক্তের সংকট মেটাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এনিয়ে আগামী ২১ তারিখ বিভিন্ন রক্ত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজসেবী, ক্লাব কর্তৃপক্ষ, কলেজ ও সরকারি দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করবেন জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা।

এবিষয়ে জেলা শাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, রক্তের কালোবাজারি নিয়ে যে তদন্ত চলছে সেই তদন্ত তন্তের মত এগোবে। সেখানে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় দেখা যায় বালুরঘাট ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের সংকট চলে৷ এমতাবস্থায় রোগী এবং রোগীর পরিজনরা রক্ত নিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়েন তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে৷ কি ভাবে রক্তের সংকট দূর করা যায় তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও ফোরামকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। প্রয়োজনের সময় রোগী বা তার পরিজনকে কোনভাবে রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে না হয় তার জন্য প্রশাসনের তরফে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে এবিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিস সুপার রাহুল দে বলেন, রক্তের কালোবাজারি রুখতে আমরা একটা হেল্প নম্বর চালু করছি। কারও রক্তের প্রয়োজন হলে ওই নম্বরে কল করলেই আমরা রক্তের ব্যবস্থা করে দেব। এছাড়াও আমরা এই রক্তের বিষয়ে নজরদারি চালাব।

Spread the love