সংবাদ সারাদিন, বালুরঘাট: উদ্ধোধনের পর থেকেই তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রাত্রী নিবাস। প্রায় বছর দেড়েক আগে এই রাত্রি নিবাসের উদ্ধোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকেই বন্ধ রয়েছে রোগীর আত্মীয় বা পরিজনদের থাকার রাত্রি নিবাস৷ যার ফলে আবাসন থাকলেও ওই রাত্রি নিবাস ব্যবহার করতে পারছেন না দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীর আত্মীয়রা। বর্তমানে রাত্রি নিবাসের মূল গেটে এখনও তালা ঝুলছে। যার ফলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীর পরিজনেরা সমস্যায় পড়ছে। রোগীর পরিবারের দাবি দ্রুত এই রাত্রি নিবাসটি খুলে দেওয়া হয়৷ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ৷
প্রসঙ্গত, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সদর হাসপাতালটি রয়েছে বালুরঘাটে। যার ফলে এই হাসপাতালে প্রতিদিন প্রচুর রোগীর চাপ থাকে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা এই জেলা হাসপাতালে আসেন। যার ফলে অনেক সময় রোগীর আত্মীয় পরিজনদের হাসপাতালেই থাকার প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে একটি মাত্র ছোট্ট আবাসনে থাকতে হয় রোগীর আত্মীয় বা পরিজনদের। যা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে রোগীর আত্মীয় পরিজনদের। এদিকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রাজ্য সরকারের আবাসন দপ্তর থেকে একটি তিনতলা ভবন নির্মান করা হয়। তিনতলা বিশিষ্ট ওই ভবনটিতে পুরুষ ও মহিলাদের থাকার মত ব্যবস্থা রয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রায়গঞ্জের সভা থেকে ভার্চুয়াল ভাবে রাত্রি নিবাস ভবনটির উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও তা খোলা হয়নি।
সম্প্রতি রোগী কন্যান সমিতির বৈঠকে ওই ভবন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওই ভবনটিকে পুরসভার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। জানা গিয়েছে, ওই ভবনের নিচ তলায় রোগীর পরিজনদের রাতে খাওয়ারের ব্যবস্থা করা হবে এবং উপরে থাকার ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু আলোচনা ও পরিকল্পনা শেষ হলেও ওই ভবনটি খোলার বিষয়ে কারও হেলদোল নেই। যার ফলে সমস্যায় পড়ছে দূর থেকে আসা রোগীর আত্মীয় পরিজনেরা।
এবিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর পরিজন জিয়ারুল সরকার ও মজিবর সরকার বলেন, গত একমাস ধরে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে তাদের রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দূরে বাড়ি হওয়ার ফলে দিনের পাশাপাশি রাতেও হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে ভবনটি চালু থাকলে পারে সে ভবনে স্বাচ্ছন্দ থাকতে পারতেন। বর্তমানে হাসপাতালের ছোট্ট একটি আবাসনে তাদের থাকতে হচ্ছে। দ্রুত এই রাত্রি নিবাস ভবনটি খুলে দেওয়া হলে পরে তাদের মত রোগীর পরিজনরা উপকৃত হবে।
এবিষয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালের সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ওই ভবনটি নতুন হয়েছে। ওই রাত্রীকালীন থাকার জন্য ওই ভবনটি নিয়ে রোগী কল্যান সমিতিতে আলোচনা হয়েছে। ওই ভবনটি পুরসভার তত্ত্বাবধানে দেওয়া যায় তা দেখা হচ্ছে। অতিদ্রুত যাতে খুলে দেওয়া হয়, তাও দেখা হচ্ছে।
এবিষয়ে বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, ওই ভবনটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে জেলাপ্রশাসনের এখনও কোন নির্দেশ পাইনি। নির্দেশ বা ছাড়পত্র পেলে ওই ভবনটি আমরা সাধারণ মানুষের জন্য থাকবার পরিকাঠামো প্রস্তুত করে ব্যবহারের উপযোগী করব।