পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফাইল লোপাটের অভিযোগে রণক্ষেত্র হরিশ্চন্দ্রপুর, সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল ও সিপিএম

সংবাদ সারাদিন, মালদা: রাতের অন্ধকারে পঞ্চায়েত অফিস থেকে ফাইল লোপাট করার অভিযোগের ভিত্তিতে কার্যত রণক্ষেত্র হয়ে উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল এবং সিপিএম সমর্থকেরা। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার সুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েত চত্বরে। তৃনমূলের আক্রমনে রক্তাক্ত এক DYFI কর্মী।হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

জানা যায়, এদিন রাত সাড়ে নয়টা নাগাদ পঞ্চায়েত সেক্রেটারি বাপি বিশ্বাস, পঞ্চায়েত এক্সিকিউটিভ বিপ্লব চক্রবর্তী ও পঞ্চায়েত সহায়ক দীপঙ্কর প্রামানিক তিন সরকারি কর্মচারী পঞ্চায়েত অফিস থেকে ১০০ দিন প্রকল্পের ফাইল লোপাট করার চেষ্টা করার জন্য রাতে পঞ্চায়েত খুলে ছিলেন। ওই সময় দুই DYFI কর্মী ও এক পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে পঞ্চায়েতের গেট খোলা দেখতে পেয়ে থমকে দাঁড়ায় এবং পঞ্চায়েত সেক্রেটারি বাপি বিশ্বাস তাদেরকে দেখে গেটে তালা মেরে পালানোর চেষ্টা করেন। এতেই তাদের সন্দেহ হয়। তারা পঞ্চায়েত সেক্রেটারির নাম, পরিচয় ও রাতে পঞ্চায়েত খোলার কারণ জানতে চাইলে সে কোনো কিছুর উত্তর না দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। এরপরই আড়ালে থাকা তৃণমূলের কর্মীরা তাদের উপরে হামলা চালায়। তৃণমূলের হামলায় জখম হয় DYFI কর্মী মহম্মদ ইরফান। তাদের দুটি বাইক ভেঙে দেওয়া হয়। এই নিয়ে দুই পক্ষই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

DYFI কর্মীদের অভিযোগ, সুলতান নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নামে ১০০ দিন প্রকল্পের ১০ কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে।আগামী ৭ এপ্রিল রয়েছে সেই মামলার প্রথম শুনানি। জেল যাওয়ার ভয়ে প্রধান ও উপ প্রধানের সহযোগিতায় তাঁরা ফাইলগুলো লোপাট করার চেষ্টা করছিল। প্রতিবাদ করায় তৃণমূল বাহিনি ডিওয়াইএফের এক নেতা ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সহ কয়েক জনকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। বাঁশ দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় ডিওয়াইএফ নেতা মহম্মদ ইরফানের। মারধর করা হয় গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য আসরাফুল হককেও। রাতেই ইরফানকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় আজ সকালে তাকে মালদহ মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী কাউসার আলি ও উপ প্রধান ওয়াহেদুর রহমানের নেতৃত্বে ওই হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। যদিও ইরফান দলবল নিয়ে পঞ্চায়েতে ভাঙচুর করেছে বলে তৃণমূল পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। হাসপাতালে গিয়ে তৃণমূল কর্মীরা তাকে গ্রেফতারের দাবিতে হইচইও করে। ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচি নেয় সিপিএম ও কংগ্রেস।১০০ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে সম্প্রতি প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিত অভিযোগ করে বাম-কংগ্রেস। আর পঞ্চায়েতের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম সারিতে ছিলেন প্রহৃত ইরফান বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ।

Spread the love